ঢাকা, শনিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ জুলাই ২০২৫, ১৬ মহররম ১৪৪৭

ফিচার

নিরাপত্তাহীনতায় সৈকতের আনন্দ

ইসমাইল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৩৫, মে ১০, ২০১৪
নিরাপত্তাহীনতায় সৈকতের আনন্দ

কক্সবাজার থেকে ফিরে: পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। প্রতি বছর হাজার হাজার দেশি বিদেশি পর্যটক ভিড় জমান এখানে।

কিন্তু পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের জন্য নেই ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাই নিজের নিরাপত্তার ভার নিজের হাতে নিয়েই পর্যটকরা বিচরণ করছেন সমুদ্র সৈকতে। এতে আশঙ্কা রয়েছে প্রাণহানির। সেই সঙ্গে হুমকির মুখে পড়তে পারে পর্যটন শিল্প।

সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্ট ও ইনানী বিচে ঘুরে পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কখন জোয়ার আর কখন ভাটা হবে তা জানানোর জন্য নেই কোনো ব্যবস্থা। এমন কি সমুদ্রে কতদূর বিচরণ করা যাবে তাও জানেন না পর্যটকরা।

এতো গেলো দিনের চিত্র। আর সন্ধ্যা নামলে অন্ধকার সৈকত আলোকিত করারও নেই কোনো ব্যবস্থা। এতে চুরি ছিনতাইসহ অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়েই চলছে সৈকতে। আলোকায়ন করা হলে সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগে বাড়তি আনন্দ থাকবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজার সাংস্কৃতিক সেন্টারে গত ৫-৭ মে আয়োজিত শিক্ষক সমাবেশের সংবাদ কাভার করতে যাওয়া ঢাকার সাংবাদিকদের কাছেও সমুদ্র সৈকতের নিরাপত্তা নিয়ে একই প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

বন্ধুদের সঙ্গে লাবনী পয়েন্টে বেড়াতে যাওয়া বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের ছাত্র আরিফুল ইসলাম বলেন, কখন জোয়ার-ভাটা হবে তা না জেনেই তারা সমুদ্রে নেমেছেন। এছাড়া সৈকতের নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

ইনানী বিচে কথা হয় ঢাকা থেকে বেড়াতে যাওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সুনীল কান্তির সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আরও কিছুক্ষণ থাকার ইচ্ছা থাকলেও নিরাপত্তার অভাবে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সবাই সমুদ্র তীর থেকে ফিরতে শুরু করেছি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রীও বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্র সৈকতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আলোকায়নসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

সমুদ্রে জোয়ারের সময় তেমন কোনো হুমকি না থাকলেও ভাটার সময়ই প্রাণহানিসহ বড় দুর্ঘটনা ঘটে। গত ১৪ এপ্রিল ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সেন্টমার্টিনে গিয়ে তেমনই দুর্ঘটনার শিকার হন।

শিক্ষামন্ত্রী মনে করেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সৈকতের কাছাকাছি সমুদ্রে জাল বসানো যেতে পারে। এতে ভাটার টানে ভেসে যাওয়া এড়ানো অনেকাংশেই সম্ভব হবে।

এছাড়া চুরি ছিনতাই এড়ানো এবং রাতের সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য সৈকতে আলোকায়ন প্রয়োজন।

লাবনী পয়েন্টে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাগরে সাঁতারের সময় নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কেউ কেউ ঘণ্টা হিসেবে টিউব ভাড়া দিচ্ছেন ৫০ থেকে ১০০ টাকায়।

আর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সৈকত ঘেষে অপরিকল্পিতভাবে বসাচ্ছেন দোকানপাট। এতে নষ্ট হচ্ছে সৈকতের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।

শিক্ষামন্ত্রী স্থানীয় জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনকে সৈকতের এই পর্যটন কেন্দ্রকে আরো উপযোগী করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।

প্রয়োজনে পর্যটন মন্ত্রী স্বয়ং উপস্থিত থেকে কাজ তদারক করে সৈকতের নিরাপত্তাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা উন্নতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে মন্তব্য করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।