ঢাকা, শনিবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩২, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৯ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা, ৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি 

আন্তজার্তিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:৫৮, জুন ২, ২০২৫
রুশ বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা, ৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি 

ইউক্রেন জানিয়েছে, রোববার (১ জুন) রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মধ্যে তারা সবচেয়ে বড় দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এই অভিযানে ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার চারটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে একযোগে হামলা চালানো হয়।

এতে প্রায় ৪০টি রুশ যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের শুরু থেকে এটিই ছিল ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় ও দূরপাল্লার ড্রোন হামলা। ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ’র পরিকল্পনায় চালানো এই ই অভিযানের নাম ছিল ‘স্পাইডারস ওয়েব’।  

এই জটিল অভিযানে ১১৭টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়, যা গোপনে কাঠের মোবাইল কেবিনের ভেতর লুকিয়ে ট্রাকের মাধ্যমে রাশিয়ায় ঢোকানো হয়। ড্রোনগুলো নির্দিষ্ট সময়ে ট্রাকের ছাদ খুলে আকাশে উড়ানো হয় এবং লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। অভিযানের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন এতটাই নিখুঁত ছিল যে, কয়েকটি ড্রোন রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি’র একটি আঞ্চলিক কার্যালয়ের কাছ থেকেও উড়ানো হয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযানের সাফল্যের জন্য এসবিইউ প্রধান ভাসিল মালিউককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই মিশনের ফলে রাশিয়ার প্রায় ৩৪ শতাংশ কৌশলগত ক্রুজ মিসাইলবাহী বিমান ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে দাবি করা হয়েছে।

রাশিয়া পাঁচটি অঞ্চলে হামলার কথা নিশ্চিত করেছে এবং এসবকে ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ হিসেবে অভিহিত করেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইভানোভো, রিয়াজান এবং আমুর অঞ্চলে হামলা প্রতিহত করা হয়েছে, যদিও মুরমানস্ক ও ইর্কুৎস্ক অঞ্চলে বেশ কয়েকটি বিমান আগুনে পুড়ে গেছে বলে স্বীকার করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানায় তারা।

এই সাহসী ড্রোন হামলার ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে যাচ্ছেন। তবে আলোচনার ফল নিয়ে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু নেই বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর একটি ব্যাপক আকাশ হামলা চালায়। ৪৭২টি ড্রোন ও একাধিক ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করে চালানো এই হামলাকে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক ইতিহাসে রাশিয়ার অন্যতম বড় আক্রমণ বলে মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেন দাবি করেছে, তারা ৩৮৫টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে তারা।

এরই মধ্যে, একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের একটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১২ জন সেনা নিহত ও ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এই ঘটনার পর ইউক্রেনের স্থল বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মিখাইলো দ্রাপাতি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন।

সূত্র: বিবিসি

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।